মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের নিন্দা জানিয়ে দেওয়া বিবৃতি আটকে দিয়েছে চীন। গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে চীনের বিরোধিতার কারণে ওই যৌথ বিবৃতি দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে আজ বুধবার জানিয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক এ সংবাদমাধ্যমটি জানায়, এই যৌথ বিবৃতির জন্য চীনের সমর্থনের দরকার ছিল। কারণ নিরাপত্তা কাউন্সিলের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীনের ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। বৈঠক শুরুর আগে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানান জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক দূত ক্রিস্টিন স্ক্রানার। তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে, নির্বাচনে সু চির দলের বিজয়ের কারণেই সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে।
এদিকে মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান এবং সু চির আটকের ঘটনাকে মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল বলে আখ্যায়িত করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম সিনহুয়া। পাশাপাশি নিজেদের মধ্যকার বিরোধ মিটিয়ে নিতে মিয়ানমারের সব পক্ষের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং।
এর আগে, গত সোমবার ভোরে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এদিন রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করে সেনাবাহিনী। রাজধানী নেপিদো ও প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় রাস্তায় টহল দিতে শুরু করে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। আর দেশজুড়ে ঘোষণা করা হয় জরুরি অবস্থা।
এরপর সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যুত্থানের খবর নিশ্চিত করে সেনাবাহিনী। অং সান সু চির সরকারকে উচ্ছেদ করা অপরিহার্য ছিলো বলে মন্তব্য করেন দেশটির সেনাপ্রধান। তবে সোমবারের অভ্যুত্থানে বেআইনিভাবে আটককৃত সবাইকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে সেনা সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল নিরাপত্তা পরিষদের খসড়া প্রস্তাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চীনের আপত্তির মুখে প্রস্তাবটি নাকচ হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের সময়ও একইভাবে নিরাপত্তা পরিষদের সব উদ্যোগে ভেটো দেয় চীন। বেইজিংয়ের দাবি, রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক অভিযান মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ইস্যু, অন্য কোনো দেশ বা সংস্থা এটা নিয়ে কথা বলার বা পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার রাখে না।



0 Comments